বিষয়বস্তুতে চলুন

আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(আবু মোহাম্মাদ হাবিবুল্লাহ থেকে পুনর্নির্দেশিত)
আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ
চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, বাংলাদেশ
কাজের মেয়াদ
১৯৭৬ – ১৯৭৭
সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি
কাজের মেয়াদ
১৯৬৮ – ১৯৭২
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯১১
বর্ধমান জেলা, পশ্চিমবঙ্গ
মৃত্যু১৯৮৪
নাগরিকত্ববাংলাদেশী, ভারতী
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পিতাআবদুল লতিফ (শিক্ষক)
জীবিকাঅধ্যাপনা, শিক্ষকতা
যে জন্য পরিচিতঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, বাংলাদেশের চেয়ারম্যান

আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ (১৯১১-১৯৮৪) বাংলাদেশী একজন লেখক, শিক্ষাবিদ ও ঐতিহাসিক। যিনি এ.বি.এম হাবিবুল্লাহ নামেই অধিক পরিচিত। তিনি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার লাইব্রেরিয়ান,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানের ছিলেন। তিনি ইসলামী বিষয়ের উপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই লিখেছেন।[১]

বাল্যকাল ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবদুল লতিফ, তিনি বর্ধমান বিভাগের স্কুল পরিদর্শক ছিলেন এবং তার পিতামহ আরবি ও ফারসি ভাষার শিক্ষক ছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবু মহামেদ হবিবুল্লাহ ছোটবেলা থেকেই আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে বড় হয়ে উঠেন। বাল্যকালে পিতার নিকট থেকে শিক্ষা লাভ করে ১৯২৬ সালে ভারতের হুগলি মাদ্রাসা থেকে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় পাশ করেন। এরপর ১৯২৮ সালে ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) থেকে আই.এ পাশ করেন। এরপর ১৯৩১ সালে হুগলী মহসিন কলেজ থেকে ইতিহাসে স্মাতক সম্মান পাশ করেন এবং ১৯৩৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এম.এ পাস করেন। তিনি লিটন বৃত্তি নিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি পড়াশোনার ফাকে পাঠাগার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা করেছিলেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

এ.বি.এম হাবিবুল্লাহ ১৯৩৮ সালে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরের বছরই তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪০ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বিভাগ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে যোগ দেন।

দেশ ভাগের পরে[সম্পাদনা]

১৯৪৭ সালে দেশভাগ তিনি কলকাতা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন, এবং ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি যোগদান করেন এবং পর্যায়ক্রমে বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬১ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডীন এবং ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর তিনি ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

দায়িত্ব পালন[সম্পাদনা]

হাবিবুল্ললাহ ঢাকা বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৭৬-৭৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, বাংলাদেশের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কিউরেটার বা রক্ষক ছিলেন। তিনি পাকিস্তান এশিয়াটিক সোসাইটির (বর্তমান বাংলাদেশ) প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

প্রকাশিত গ্রন্থ[সম্পাদনা]

এ বি এম হাবিবুল্লাহ মধ্যযুগের ভারতের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তার রচিত গ্রন্থগুলো উপমহাদেশের ইতিহাস ভিত্তিক অন্যতম নিরভরযোগ্য বই। তার লিখিত বইসমূহ:

  • ফাউন্ডেশন অফ মুসলিম রুল ইন ইন্ডিয়া (ভারতে মুসলিম বিধি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি) উপমহাদেশের প্রাথমিক মধ্যযুগের ঐতিহাসিক গ্রন্থ
  • দ্যা ডেসক্রিপটিভ ক্যাটালগ অফ দ্যা পার্সিয়ান (ইরানি বর্ণনামূলক ক্যাটালগ)
  • উর্দু অ্যান্ড আরবিক মানুস্ক্রিপ্ট ইন দ্যা ঢাকা ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরি (২ ভলিউম) (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে উর্দু এবং আরবি পাণ্ডুলিপিগুলি, ২ খন্ড)
  • বেলায়েত নামা
  • তাহরিখ-ই-আসাম
  • তাহকিক-ই-হিন্দ (অনুবাদ গ্রন্থ) মূল লেখকঃ আল বিরুনীর

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. রতনলাল চক্রবর্তী (২০১২)। "হাবিবুল্লাহ, এ.বি.এম"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]