বিষয়বস্তুতে চলুন

মানুয়েল দা আস্‌সুম্পসাঁউ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(মানোএল দা আস্‌সুম্পসাঁউ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মানোএল দা আস্‌সুম্পসাঁউ (পর্তুগিজ: Manuel da Assumpção) একজন পর্তুগিজ যিনি অষ্টাদশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষে আগমন করেছিলেন। বলা হয়ে থাকে তিনিই প্রথম ইউরোপিয় যিনি ভালোবেসে বাংলা ভাষার আসক্ত হয়েছিলেন। তিনি একজন ক্যাথলিক পাদ্রী যিনি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রধানত অবিভক্ত বঙ্গ এলাকায় আস্তানা গেড়ে বসবাস শুরু করেন। বাংলাভাষী জনগণের মধ্যে খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারের সুবিধার্তে তিনি একটি গ্রন্থ রচনা করেন। এ গ্রন্থের নাম কৃপার শাস্ত্রের অর্থ ভেদ। মূল গ্রন্থটি পর্তুগিজ ভাষায় রচিত। তবে একই সঙ্গে বঙ্গানুবাদ প্রদান করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ কার্যত এটি একটি দ্বিভাষিক গ্রন্থ। তবে উল্লেখ্য যে, বঙ্গানুবাদ মুদ্রিত হয়েছে রোমান হরফে, বাংলা বা দেবনাগরী হরফে নয়। [১]

অধিকন্তু আস্‌সুম্পসাঁউ বাংলা ভাষার একটি ব্যাকরণ রচনা করার প্রয়াস নেন। এ গ্রন্থটিও রোমান হরফে রচিত। সংক্ষেপে এর নাম ভোকাবুলারিও। এ গ্রন্থে ব্যাকরণ ছাড়াও বাংলা-পর্তুগিজ ও পর্তুগিজ-বাংলা অভিধান সংকলিত ছিল। গ্রন্থটি দুটি রচনার সময় তিনি ঢাকার অদূরে হালের গাজীপুর জেলার অন্তর্গত ভাওয়াল গড়ে অবস্থান করছিলেন। [১]

বাংলা গদ্য রীতি[সম্পাদনা]

মানোএল দা আস্‌সুম্পসাঁউ-এর রচনা রীতি বাংলা গদ্যের অন্যতম আদি নিদর্শন। ১৭৪৩ সালে প্রকাশিত কৃপার শাস্ত্রের অর্থ ভেদ গ্রন্থ থেকে নিম্নরূপ উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। লক্ষ্যণীয় এই অংশে ঢাকা এলাকার কথ্য ভাষা প্রতিফলিতঃ–

ফ্লান্দিয়া দেশে এক সিপাই বড় তেজোবন্ত আছিল। লড়াই করিতে করিতে বড় নাম তাহার হইল, এবং রাজায় তাহারে অনেক ধন দিলেন। ধন পাইয়া তাহার পিতামাতার ঘরে গেল। তাহার দেশে রাত্রে পৌঁছিল। তাহার এক বইন আছিল ; তাহার পন্থে লাগাল পাইল ; ভাইয়ে বইনরে চিনিল, তাহারে বইনে না চিনিল। তখন সে বইনেরে কহিল, "তুমি কী আমারে চিন?" "না, ঠাকুর" বইনে কহিল। সে কহিল,"আমি তোমার ভাই।" ভাইয়ের নাম শুনিয়া উনি বড় প্রীত হইল। ভাইয়ে ঘরের খবর লইল, জিজ্ঞাস করিল, "আমারদিগের পিতামাতা কেমন আছেন?" বইনে কহিল, "কুশল।" দুইজনে কথাবার্তা কহিল।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ইফ্‌ফাত আরা: জানার আছে অনেক কিছু, দেশ প্রকাশন, ১৯৯৯, শাহবাগ, ঢাকা।
  2. কৃপার শাস্ত্রের অর্থ ভেদ, ১৭৪৩, পুঁথি ১, তাজেল ৩।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]