চাঁচর উৎসব
বঙ্গের সংস্কৃতি |
---|
বিষয় সম্পর্কিত ধারাবাহিক |
ইতিহাস |
চাঁচর উৎসব বা মেড়া/বুড়ির ঘর পোড়ানো হল দোলযাত্রার আগের দিন ফাল্গুনী শুক্লা চতুর্দশীতে বাংলা ও ওড়িশায় অনুষ্ঠিত একটি বহ্নুৎসব। উত্তর ও পশ্চিম ভারতে এই উৎসবটি প্রকারান্তরে হোলিকা দহন হিসাবে পরিচিত।[১]
বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]
বাংলায় দোল পূর্ণিমার আগের দিন বিষ্ণু/কৃষ্ণ মন্দিরের বা গৃহস্থের বাড়ীর আঙিনার সামনে উদ্ভিজ্জ দাহ্যবস্তু (যথা: বাঁশ, কাঠ, বিচালি, শুকনো লতা/পাতা ইত্যাদি) নির্মিত একটি ঘর বা কুশপুত্তলিকা রাখা হয়। এরপর পূজার্চনা করে সেটিতে অগ্নি প্রদান করা হয়। প্রজ্জ্বলিত 'মেড়া'টির চারপাশে বিগ্রহমূর্তিটিকে শোভাযাত্রা সহকারে ঘোরানোও হয়। পরদিন সকালে বিগ্রহমূর্তিকে মন্দিরে সুসজ্জিত দোলনায় বসিয়ে পূজার্চনা করে তিনবার দোল দেওয়া হয় এবং বিগ্রহে আবির দেওয়ার পর উপস্থিত সকলে রঙখেলা শুরু করেন।[১]
উদ্ভব[সম্পাদনা]
আচার্য যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধির মতে, অতি প্রাচীনকালে শীতকালের শেষে এই সময় সূর্যের উত্তরায়ণ গতি শুরু হত৷ এখনকার দোল-উৎসব বস্তুত সেই সময়েরই স্মৃতি বহন করছে। তাঁর মতে, চাঁচর অনুষ্ঠানে যে গৃহ বা কুশপুত্তলিকা দগ্ধ করা হয়, তা মেষরূপী ভাদ্রপদা নক্ষত্রের প্রতিরূপ। ঋগ্বেদে ঐ নক্ষত্রের নাম 'অজ একপাদ' (একপদবিশিষ্ট ছাগ)। এই বহ্নুৎসবে অসুররূপে কল্পিত ঐ মেষ বা ছাগকে ভস্মীভূত করা হয়, যার বিনষ্টির ফলে সূর্যের উত্তরায়ণের বাধা অপসৃত হয় এবং সূর্যের তাপ ও দিনের বৃদ্ধি ঘটে। বহ্নুৎসবের পর লাল/সাদা আবির কৃষ্ণের বিগ্রহে স্পর্শকরণ শীতের লোহিতবর্ণ সূর্যের দ্যোতক। [১]