বিষয়বস্তুতে চলুন

মোহসীন-উল হাকিম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মোহসীন-উল হাকিম
মোহসীন-উল হাকিম
জন্ম
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশা
কর্মজীবন২০০০-বর্তমান
প্রতিনিধিযমুনা টিভি
উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব
দস্যুমুক্ত সুন্দরবনে বিশেষ অবদান

মোহসীন-উল হাকিম একজন বাংলাদেশী লেখক এবং সাংবাদিক। তিনি বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।[১][২] সুন্দরবন জলদস্যু মুক্তকরণে বিশেষ অবদান রাখা সাংবাদিক হিসেবে তিনি পরিচিত। [৩]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

মোহসীন-উল হাকিম নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার পার-নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন, তার বাবা ছিলেন সেনা কর্মকর্তা। তিনি নওগাঁ কে.ডি. স্কুল থেকে ১৯৮৮ সালে ষষ্ঠ শ্রেণী পাশ করেন, এরপর সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে। সেখানেই মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন ১৯৯৩ ও ১৯৯৫ সালে। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগে পড়াশোনা করেছেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

২০০০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত অবস্থায় মোহসীন-উল হাকিম কর্মজীবন শুরু করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান পরিপ্রেক্ষিত-এ শিক্ষানবীশ রিপোর্টার হিসাবে তার সাংবাদিকতা জীবন শুরু। এরপর তিনি কাজ করেছেন চ্যানেল আই, এটিএন বাংলা, দেশ টিভি, এটিএন নিউজ, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরে। বর্তমানে তিনি যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।[৪]

দস্যুমুক্ত সুন্দরবনে বিশেষ অবদান[সম্পাদনা]

২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় বাংলাদেশে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সাংবাদিক মোহসীন-উল হাকিম তখন এটিএন নিউজে কর্মরত। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার  প্রতিবেদন করতে মোহসীন-উল হাকিম যান খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার দুর্গত এলাকায়। জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় এক জেলে তাকে বলেন, ‘আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব। কিন্তু সুন্দরবনের দস্যুরা যে ক্ষতি করছে তা কাটিয়ে উঠতে পারব না। আমাদের বাঁচান। পারলে দস্যুদের ঠেকাতে কিছু করুন।’ অসহায় জেলেদের এই আকুতি মোহসীন-উল হাকিমকে যথেষ্ট প্রভাবিত করে। এরপর থেকে তিনি বারবার ছুটে গেছেন সুন্দরবনে এবং বনদস্যুদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করতে থাকেন। তাদের সাথে কথা বলে বুঝতে পারেন তারাও হিংস্রতা ছেড়ে ফিরতে চায় স্বাভাবিক জীবনে।[৫][৬] ধীরে ধীরে মোহসীনের সঙ্গে বনদস্যুদের এক ধরনের আস্থার সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তিনি বনদস্যুদের নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রচার করতে থাকেন। এটিএন নিউজ থেকে চ্যানেল টুয়েন্টিফোর, তারপর যমুনা টিভিতে প্রতিবেদনগুলো প্রচার করতে থাকেন। যমুনা টেলিভিশনে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রচার হওয়ার পর ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে র‍্যাবের শীর্ষ পর্যায় থেকে যোগাযোগ করা হয় সাংবাদিক মোহসীনের সঙ্গে। দ্রুত চলতে থাকে দস্যুদের আত্মসমর্পণের কাজ। মোহসীন-উল হাকিমের মধ্যস্ততায় ২০১৬ সালের ৩১ মে ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র আর সাড়ে ৫ হাজারের বেশি গুলি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় দস্যুদল মাস্টার বাহিনী।[৭] ক্রমান্বয়ে চলতে থাকে আত্মসমর্পণ। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে ‘দস্যুমুক্ত সুন্দরবন’ ঘোষণা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা[৮][৯]

প্রকাশিত গ্রন্থ[সম্পাদনা]

  • জীবনে ফেরার গল্প[৪]
  • সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ দস্যুদের রূপান্তরের গল্প [৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "মোহসীন-উল হাকিম"www.dhakapost.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-১৪ 
  2. "'চেষ্টা সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার'"SAMAKAL (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২১ 
  3. "একজন সাংবাদিক যেভাবে সুন্দরবনের জলদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করেছেন"The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০৫-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-০৬ 
  4. "দস্যুজয়ী মোহসীন-উল হাকিমের গল্প"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-১৪ 
  5. "দস্যুজয়ী এক সাংবাদিকের গল্প"Bangla Tribune। ২০২২-০৬-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-১৪ 
  6. "দাদাগিরিতে বাংলাদেশের মোহসীন-উল-হাকিম | বিনোদন"Somoy News। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২১ 
  7. "সুন্দরবনে শান্তি ফেরালেন যে সাংবাদিক"BBC News বাংলা। ২০১৭-০৯-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-১৪ 
  8. "'দস্যুমুক্ত সুন্দরবন'র তৃতীয় বর্ষপূর্তি আজ"jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-১৪ 
  9. "সুন্দরবনের গল্প শুনাবেন মোহসীন-উল হাকিম"DailyInqilabOnline। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২১