সাদুল্লাপুর
সাদুল্লাপুর, যা গোলাপ গ্রাম নামেও পরিচিত, ঢাকার অদূরে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত একটি পর্যটন আকর্ষণ। এই পুরো গ্রামটিই নানা রঙের গোলাপ ফুল দিয়ে ঘেরা। একে গোলাপ গ্রাম বলা হলেও এখানে গোলাপ ছাড়াও অনেক ফুল আছে, যেমন- জারবেরা, গ্লাডিওলাস ইত্যাদি। ঢাকায় ফুলের চাহিদা মেটাতে এই গ্রাম ভূমিকা রাখে।[১]
অবস্থান[সম্পাদনা]
ঢাকার অদূরে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত সাদুল্লাপুর বা গোলাপ গ্রাম। মিরপুর বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশে সাদুল্লাপুর, শ্যামপুর, মোস্তা পাড়া ইত্যাদি গ্রাম অবস্থিত। এসব গ্রামজুড়ে রয়েছে গোলাপের রাজ্য।[২] গ্রামের রাস্তার দু’পাশ জুড়েই গোলাপের দেখা পাওয়া যায়। তাই এ গ্রামগুলো 'গোলাপ গ্রাম' নামেই বেশি পরিচিত। শুধু সাদুল্লাহপুর নয়, আশপাশের শ্যামপুর, কমলাপুর, বাগ্মীবাড়ি গ্রামেও অসংখ্য গোলাপ বাগানের দেখা মেলে।[৩]
বর্ণনা[সম্পাদনা]
সাদুল্লাহপুর গ্রামটি একসময় ভাওয়াল রাজার অধীনস্থ ছিল।[৪] বাণিজ্যিকভাবে এখানে প্রথম গোলাপ চাষ শুরু হয় ১৯৯০ সালে। গোলাপের চাষ লাভবান হওয়ায় ক্রমে এসব এলাকার অনেকেই এর চাষে যুক্ত হতে থাকে। পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ফুল – মিরিন্ডা গোলাপ, চায়না গোলাপ, ইরানি গোলাপ, জারবেরা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্র মল্লিকা ইত্যাদির চাষ শুরু হয়। গোলাপের চাষ এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।[৫] গ্রামের পথের ধার ঘেঁষে রয়েছে অসংখ্য গোলাপের বাগান। লাল গোলাপের আধিক্য বেশি হলেও এর মাঝেই কিছু সাদা গোলাপ, গ্লাডিওলাস, জারবেরার বাগানও চোখে পড়ে।[৬] বিপুল পরিমাণ গোলাপের ক্রয়-বিক্রয় হতে দেখা যায় এ অঞ্চলে। লাল, নীল, হলুদ, গোলাপী, বেগুনীসহ বিভিন্ন রং ও আকৃতির গোলাপ রয়েছে। মূলত ঢাকা শহর থেকে খুব নিকটে অবস্থান করায় এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেশ আকর্ষণীয় হওয়ায় এখানে দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে।[৭]
গোলাপের হাট[সম্পাদনা]
শ্যামপুর গ্রামে প্রতি সন্ধ্যায় গোলাপের হাট বসে। হাটে পাইকারি ফুল কেনাবেচা হয়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য ব্যবসায়ীর আনাগোনা ঘটে সেখানে। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই হাট। এ ছাড়া মোস্তাপাড়ায় অবস্থিত সাবু মার্কেটেও গোলাপ বেচাকেনা হয়। গোলাপের চাহিদা সারাবছরই বিদ্যমান থাকায় চাষিরাও সারা বছরই ব্যস্ত থাকেন। তবে বিশেষ উৎসবের দিনগুলোতে চাহিদা বহুগুণ বেড়ে যায়।[২][৮]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "গোলাপ ফুলের গ্রাম"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১১।
- ↑ ক খ "গোলাপ গ্রাম"। দৈনিক ইত্তেফাক। ৩ মার্চ ২০১৭। ২৭ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৯।
- ↑ "গোলাপের রাজ্য সাদুল্লাহপুর"। archive.vn। ২০১৯-০৬-২৭। Archived from the original on ২০১৯-০৬-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১১।
- ↑ "গোলাপ গ্রামে একদিন"। www.poriborton.news। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "গোলাপ যেভাবে বদলে দিল বিরুলিয়া ইউনিয়নের নাম"। banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১১।
- ↑ শৈলী, লেখা ও ছবি : সুমন্ত গুপ্ত (২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "গোলাপের গ্রামে"। দৈনিক সমকাল। ২৭ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৯।
- ↑ "ঘুরে আসুন নয়নাভিরাম গোলাপ গ্রামে"। archive.vn। ২০১৯-০৬-২৭। Archived from the original on ২০১৯-০৬-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১১।
- ↑ গোলাপের রাজ্য সাদুল্লাপুর, সাদ্দিফ অভি (৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "একদিনেই ঘুরে আসুন 'গোলাপ গ্রাম' থেকে"। বাংলাট্রিবিউন। ২৭ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৯।