এথেলরেড (আর্চবিশপ)
এথেলরেড | |
---|---|
ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ | |
নির্বাচিত | ৮৭০ |
মেয়াদ শেষ | ৩০ জুন, ৮৮৮ |
পূর্ববর্তী | সেওলনথ |
পরবর্তী | প্লেগমুন্ড |
আদেশ | |
পবিত্রকরণ | ৮৭০ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
মৃত্যু | ৩০ জুন, ৮৮৮ |
এথেলরেড (ইংরেজি: Æthelred বা Ethelred; মৃত্যু: ৩০ জুন, ৮৮৮ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডের ক্যান্টারবেরির এক অ্যাংলো-স্যাক্সন আর্চবিশপ। একটি সূত্রে উল্লিখিত হয়েছে যে, ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ পদে উন্নীত হওয়ার আগে তিনি ছিলেন উইল্টশায়ারের বিশপ; তবে এই তথ্যটিকে ভ্রান্ত মনে করা হয়। এথেলরেডের কার্যকালের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত হয়েছিল ইংল্যান্ডে ভাইকিং বহিরাক্রমণের ফলে উদ্ভূত স্থানচ্যুতি-সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবিলায়। এই সময় আবার রাজা অ্যালফ্রেডের সঙ্গে গির্জা-সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ উপস্থিত হয়। বিরোধ বাধে পোপের ইংরেজ যাজকমণ্ডলীকে সংস্কার করার ইচ্ছার সঙ্গেও।
জীবনী[সম্পাদনা]
অ্যাংলো-স্যাক্সন ক্রনিকল (এফ পাঠান্তর) সহ কোনও কোনও সূত্রে উল্লিখিত হয়েছে যে, ৮৭০ খ্রিস্টাব্দে এথেলরেড উইল্টশায়ারের বিশপরিক থেকে বদলি হয়ে আসেন ক্যান্টারবেরির সি-তে। যদিও বর্তমানে প্রমাণিত হয়েছে যে, বদলির এই কাহিনিটি গৃহীত হয়েছে অ্যাবিংডনের এলফ্রিকের জীবন থেকে, যিনি ৯৯৫ থেকে ১০০৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আর্চবিশপ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বদলির কাহিনিটি ভ্রান্ত হলেও এটা প্রমাণিত যে, এথেলরেড আর্চবিশপ পদে অভিষিক্ত হন ৮৭০ খ্রিস্টাব্দেই।[১] তিনি কেন ক্যান্টারবেরির জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তা জানা যায় না। কারণ এই নির্বাচন সম্পর্কে সমসাময়িক কোনও তথ্য এখন আর পাওয়া যায় না।[২]
আর্চবিশপ রূপে এথেলরেডের কার্যকালের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত হয়েছিল ভাইকিং হানার ফলে উদ্ভূত সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করতে গিয়ে। সেই সঙ্গে গির্জা-সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ-নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে রাজা অ্যালফ্রেডের সঙ্গে এথেলরেডের বিরোধও বেধেছিল। এথেলরেড আর্চবিশপ থাকাকালীনই অষ্টম শতাব্দী থেকে তদবধি বিদ্যমান সুসমাচার গ্রন্থ স্বর্ণালি সুসমাচারসমূহ একটি হানাদার বাহিনীর থেকে লুট করে ক্যান্টারবেরিকে দান করা হয়েছিল।[১] পোপ অষ্টম জন এথেলরেড ও ইয়র্কের আর্চবিশপ উলফরেডেরকাছে ইংরেজ যাজকদের পোষাক সংস্কারের সুপারিশ করেছিলেন। অ্যাংলো-স্যাক্সন যাজকরা ব্রিটেনের সাধারণ মানুষের সাধারণ রীতি অনুযায়ী খাটো টিউনিক পরিধান করতেন। রোমান প্রথা অনুযায়ী অবশ্য যাজকদের দীর্ঘ ঢিলা জামা বা হ্যাবিট পরার রীতি প্রচলিত ছিল। পোপ ও অন্যান্য মহাদেশীয় যাজকেরা অ্যাংলো-স্যাক্সন প্রথাটির বিরোধী ছিলেন। এথেলরেড ও উলফরেড যাজকদের পোষাক পরিবর্তনের কোনও প্রচেষ্টা করেছিলেন কিনা তা জানা যায় না, তবে অ্যাংলো-স্যাক্সন যাজকবর্গের পোষাক-সংক্রান্ত রীতিনীতিতে কোনও পরিবর্তনই আসেনি।[২]
৮৭৭ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ এথেলরেড পোপ অষ্টম জনের কাছে ক্যান্টারবেরির প্রতি রাজা অ্যালফ্রেডের আচরণ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে একটি চিঠি দেন। এই বিবাদের প্রকৃত কারণটি স্পষ্ট না হলেও আর্চবিশপকে লেখা পোপের প্রত্যুত্তরটি আজও রক্ষিত আছে। পোপ আর্চবিশপকে লিখেছিলেন যে, তিনি ক্যান্টারবেরিকে সমর্থন করেন এবং আর্চবিশপের অধিকারকে সম্মান প্রদর্শন করার সুপারিশ জানিয়ে তিনি রাজাকে চিঠি দিয়েছেন।[৩] লেখক জাস্টিন পোলার্ড এই চিঠিটিকে অ্যালফ্রেডের অপসারণে পোপের সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, ৮৭৮ খ্রিস্টাব্দের বড়োদিনে এই অপসারণের ঘটনাটি ঘটেছিল এবং এতে এথেলরেডের সমর্থন ছিল।[৪] যদিও অন্যান্য ইতিহাসবিদেরা এই যুগে আর্চবিশপের সমর্থনে রাজাকে অপসারণের কোনও ঘটনা ঘটেছিল বলে মনে করেন না।[৫][৬]
এছাড়াও এথেলরেড এল্ডরম্যান অ্যালফ্রেডের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হন: এই চুক্তি বলে অ্যালফ্রেডকে ক্যান্টারবেরির একটি এস্টেট সারা জীবন ব্যবহারের জন্য প্রদান করা হয় এই শর্তে যে মৃত্যুর পর তিনি নিজ এস্টেটগুলির একটিকে আইন মারফত দান করার ব্যবস্থা করে যাবেন। যদিও যে নথিতে এই চুক্তির কথা লিপিবদ্ধ হয়ে রয়েছে সেটিতে কোনও তারিখ উল্লিখিত হয়নি। তাই এথেলরেডের যাজকত্বের ঠিক কোন সময়ে এই নথিটি রচিত হয়েছিল তা জানা যায় না।[২] আর্চবিশপের ক্ষেত্রে আরেকটি সমস্যার কারণ ছিল ক্যান্টারবেরিতে লিপিকরদের দক্ষতার অবনতি। প্রাগুক্ত নথিটিতে এই অদক্ষতা বহু ভুলভ্রান্তি ও প্রতিলিপির মধ্য দিয়ে নাটকীয়ভাবে চিত্রিত হয়ে রয়েছে। এই যুগের আরেকটি নথি সেই সময়কার লিপিকরদের লাতিন জ্ঞানের অপর্যাপ্ততার সাক্ষ্য দেয়।[৭]
৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন এথেলরেড প্রয়াত হন।[৮]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ ওয়ারহ্যাম, "এথেলরেড", অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি
- ↑ ক খ গ ব্রুকস, আর্লি হিস্ট্রি অফ দ্য চার্চ অফ ক্যান্টারবেরি, পৃ. ১৪৯–১৫২
- ↑ অ্যাবেলস, অ্যালফ্রেড দ্য গ্রেট, পৃ. ২৪৪
- ↑ পোলার্ড, অ্যালফ্রেড দ্য গ্রেট, পৃ. ১৬০–১৬৬
- ↑ ওরমাল্ড, "অ্যালফ্রেড", অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি
- ↑ অ্যাবেলস, অ্যালফ্রেড দ্য গ্রেট পৃ. ১৫০–১৫৫
- ↑ ব্রুকস, আর্লি হিস্ট্রি অফ দ্য চার্চ অফ ক্যান্টারবেরি, পৃ. ১৭২–১৭৩
- ↑ ফ্রাইড, ও অন্যান্য, হ্যান্ডবুক অফ ব্রিটিশ ক্রনোলজি, পৃ. ২১৪
উল্লেখপঞ্জি[সম্পাদনা]
- অ্যাবেলস, রিচার্ড ফিলিপ (১৯৯৮)। অ্যালফ্রেড দ্য গ্রেট: ওয়ার, কিংশিপ, অ্যান্ড কালচার ইন অ্যাংলো-স্যাক্সন ইংল্যান্ড। নিউ ইয়র্ক: লংম্যান। আইএসবিএন 0-582-04047-7।
- ব্রুকস, নিকোলাস (১৯৮৪)। দি আর্লি হিস্ট্রি অফ দ্য চার্চ অফ ক্যান্টারবেরি: ক্রাইস্ট চার্চ ফ্রম ৫৯৭ টু ১০৬৬। লন্ডন: লেইস্টার ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 0-7185-0041-5।
- ফ্রাইড, ই. বি.; গ্রিনওয়ে, ডি. ই.; পোর্টার, এস.; রয়, আই. (১৯৯৬)। হ্যান্ডবুক অফ ব্রিটিশ ক্রনোলজি (তৃতীয় সংশোধিত সংস্করণ)। কেমব্রিজ: কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 0-521-56350-X।
- পোলার্ড, জাস্টিন (২০০৫)। অ্যালফ্রেড দ্য গ্রেট: দ্য ম্যান হু মেড ইংল্যান্ড। লন্ডন: জন মারে। আইএসবিএন 978-0-7195-6666-0।
- ওয়ারহ্যাম, এ. এফ. (২০০৪)। "এথেলরেড (ডি. ৮৮৮)"। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। ডিওআই:10.1093/ref:odnb/8914। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০০৭।(সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন)
- ওরমল্ড, প্যাট্রিক (২০০৪)। "অ্যালফ্রেড (৮৪৮/৯–৮৯৯)"। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি (সংশোধিত অক্টোবর ২০০৬ সংস্করণ)। = অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। ডিওআই:10.1093/ref:odnb/183। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১১।(সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন)
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
খ্রিস্টান উপাধি | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী সেওলনথ |
ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ ৮৭০–৮৮৮ |
উত্তরসূরী প্লেগমুন্ড |