বিষয়বস্তুতে চলুন

কবি (উপন্যাস)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কবি
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র কর্তৃক ১৯৯০ সালে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ
লেখকতারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রচ্ছদ শিল্পীধ্রুব এষ( বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত সংস্করণের)
দেশবৃহত্তর ভারতবর্ষ
ভাষাবাংলা
ধরনসামাজিক উপন্যাস
প্রকাশক(১ম সংস্করণের তথ্য প্রয়োজন), বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, ১৭ ময়মনসিংহ রোড, বাংলামটর ঢাকা ১০০০ (১৯৯০)
প্রকাশনার তারিখ
১৯৪৪
পৃষ্ঠাসংখ্যা১৫২
আইএসবিএন৯৮৪ ১৮ ০০২৭ ৬

কবি একটি বহুল আলোচিত বাংলা উপন্যাস। এটির রচয়িতা বাংলাভাষার প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। কাহিনীর বিবেচনায় এটি একটি সামাজিক উপন্যাস[১] কবিয়াল, ঝুমুরদল সহ ঐ সময়ের জীবনযাত্রার প্রেক্ষিতে এই বিখ্যাত উপন্যাসটি রচিত হয়েছে।[২]


প্রকাশের ইতিহাস[সম্পাদনা]

কবি উপন্যাসটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা দ্বাদশ উপন্যাস। এ উপন্যাসটি প্রকৃতপক্ষে তার লেখা একটি পূর্ব-প্রকাশিত ছোটগল্পের বিস্তৃত রূপ। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় এর সম্পাদনায় প্রকাশিত প্রবাসী মাসিকপত্রে গল্পটি ১৯৪১ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। গ্রন্থাকারে প্রকাশের আগে "কবি" উপন্যাসটি পাটনা থেকে প্রকাশিত প্রভাতী পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ১৯৪২ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। কবি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৪৩ সালে।[৩]

কাহিনী[সম্পাদনা]

তারাশঙ্করের বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পে বিশেষভাবে বীরভূম-র্বধমান অঞ্চলের সাঁওতাল, বাগদি, বোষ্টম, ডোম, বাউরি, গ্রাম্য কবিয়াল ইত্যাদি সম্প্রদায়ের কাহিনী চিত্রায়িত হয়েছে। কবি উপন্যাসের উপজীব্য অন্ত্যজ শ্রেণির একজন কবিয়ালের জীবনগাথা। কয়িালের নাম নিতাইচরণ।

নিচু বংশে জন্মানো নিতাইচরণ গ্রামের সবাইকে চমকে দিয়ে কবি হয়ে ওঠে। সে কবিয়ালদের দোহার হিসেবে কাজ করছিল। কিন্তু গ্রামের পালাগানের আসরে এক প্রতিষ্ঠিত কবিয়ালের অনুপুস্থিতিতে তার সামনে সুযোগ খুলে যায় নিজের কবিয়াল পরিচয় গ্রামবাসীকে জানিয়ে দেয়ার। অভিজ্ঞ কবিয়াল মহাদেবের কাছে সেই দফায় হেরে গেলেও তার উদ্দেশ্য সফল হয়। বাবুরা রীতিমত অবাক- 'ডোমের ছেলে পোয়েট!' নিতাইচরণের পারিবারিক পেশা ছিল ডাকাতি; কিন্তু সে হল অন্যরকম। এমনকি মায়ের অনুরোধ বা মামার শাসনের পরেও সে পড়াশুনো ছেড়ে ডাকাতির দলে নাম লেখায়নি। ঘরবাড়ি ছেড়ে স্টেশনে গিয়ে থাকে। এখানেই তার সাথে বন্ধুত্ব হয় স্টেশনের মুটে রাজার সাথে। নিতাইয়ের ওপর রাজা'র ভক্তি ও বিশ্বাস ছিল অগাধ। নিতাইকে সে ডাকত 'ওস্তাদ' বলে। এদিকে রাজারই এক আত্মীয়কে ঠাকুরঝি বলে ডাকত সে। বিবাহিত ঠাকুরঝি রোজ এসে দুধ বিক্রি করে যেত। মেয়েটার গায়ের রং কাল ছিল বলে গ্রামের লোকজন তো বটেই, রাজা-ও নানা কথা শোনাত। কিন্তু এই মেয়েটার জন্যই নিতাই এর মাথায় একটা পদ তৈরি হয়- 'কাল যদি মন্দ তবে চুল পাকিলে কান্দ কেনে?' জীবনের সব জায়গায় অপমান পাওয়া ঠাকুরঝি এই পদ শুনে আন্দোলিত হয়। আর নিতাই এর মনে, অসম্ভব জেনেও, ঠাকুরঝির জন্য গভীর প্রেম জন্মায়। একপর্যায়ে বিষয়টা জানাজানি হলে নিতাই গ্রাম ছেড়ে চলে যায়।

নিতাই যুক্ত হয় ঝুমুরদলের সাথে। এই দল অশ্লীল গান-বাজনা করে এবং নারীরা গানের গানের সাথে নাচ করলেও তারা মূলত দেহোপজীবিনী। সে ক্রমশ তার নিজের ভিতরকার কবিয়ালের সত্ত্বাকে চেপে রেখে এই দলের মত করেই গান রচনা করে। এখানে সে বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায়। সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় বসন্ত (বা বসন) এর সাথে। বসনের মধ্যে সে ঠাকুরঝির ছায়া দেখতে পায়। দুজনের মাঝে সখ্যতা গড়ে ওঠে।

এই ব্যবসায় থাকলে নানা ধরনের রোগ হয়ে থাকে, এবং তারই এক রোগে রোগাক্রান্ত হয়ে একসময়ে বসন্তও মারা যায়। শোকে কাতর হয়ে ঝুমুরদল ছেড়ে দেয় নিতাই। সে কাশীসহ অন্যান্য স্থান ঘোরে। কিন্তু তার মন না টেকায় একসময় আবারও সে নিজের আগের গ্রামে ফিরে আসে।

রাজা'র কাছ থেকে জানতে পারে ঠাকুরঝি আর বেঁচে নেই, নিতাই গ্রামছাড়ার পরে সে উন্মাদ হয়ে মারা যায়। গভীর হতাশায় নিতাই প্রশ্ন করে- 'জীবন এত ছোট ক্যানে?'

প্রধান চরিত্রাবলী[সম্পাদনা]

  • নিতাই বা কবি
  • তারণ মণ্ডল
  • বিপ্রপদ
  • রাজা বা রাজন
  • ঠাকুরঝি
  • বসন্ত বা বসন
  • মাসি

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]