র‍্যাপিড পাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
র‍্যাপিড পাস
র‍্যাপিড পাস কার্ড
পরিসীমাঢাকা, বাংলাদেশ
চালু৪ জানুয়ারি ২০১৮ (2018-01-04)
পরিচালনাকারীঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ
মুদ্রা ব্যবস্থাবাংলাদেশী টাকা (নূন্যতম পরিমাণ ৳১০০, সর্বোচ্চ পরিমাণ ৳১০,০০০)
সংরক্ষিত-মূল্যই-পার্স
ক্রেডিট মেয়াদনেই
স্বয়ংক্রিয় রিচার্জনা
বৈধতা
বিক্রয়কেন্দ্র
ওয়েবসাইটrapidpass.com.bd/bn

র‍্যাপিড পাস হল স্মার্ট কার্ডভিত্তিক একটি স্বয়ংক্রিয় ভাড়া সংগ্রহ ব্যবস্থা যা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অংশগ্রহণকারী সরকারি গণপরিবহন ব্যবস্থাগুলোতে ব্যবহৃত হয়। ২০১৭ সালে পরীক্ষামূলকভাবে র‍্যাপিড পাস কার্ড রিডার চালু করা হয়। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন শুরু হয় এবং এটি মেট্রো স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশন, বাস স্টপ ও টার্মিনাল এবং বিভিন্ন পরিবহন ব্যবস্থার যানবাহন জুড়ে চালু করা হয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

২০১৪ সালে[১] ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ৳৩৯.০৬ কোটি ব্যয়ে ঢাকা শহরের জন্য স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায় ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা প্রকল্পটির জন্য কারিগরি সহায়তা ও মোট ব্যয়ের ৭৩% প্রদান করে।[২] ২০১৭ সালের মে মাসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নগরীর আবদুল্লাহপুর–মতিঝিল রুটে চলাচলকারী বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত বাসের জন্য পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে র‍্যাপিড পাস সার্ভিস চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ জানুয়ারি ২০১৮ সালে র‍্যাপিড পাস কার্ড সেবার উদ্বোধন করেন।[৩] প্রকল্পটি ২০১৯ সালে সম্পন্ন হবে বলে বলা হয়,[৪] যার সাথে আদায় হওয়া ভাড়া বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির মধ্যে তাদের পাওনা অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়ার জন্য একটি ক্লিয়ারিং হাউস ব্যাংক স্থাপন করা প্রক্রিয়াধীন ছিল; যা পরে ডাচ-বাংলা ব্যাংক দ্বারা বাস্তবায়িত হয়।[৫] ২১ জুন ২০২২ সালে আয়োজিত বাস রুট যৌক্তিককরণের বৈঠকে ঢাকার সব ধরনের পরিবহনে র‍্যাপিড পাসের ব্যবহার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।[৬] ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন তাদের পরিচালিত সকল বাস পরিবহন সেবার জন্য র‍্যাপিড পাস কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়।[৭] ২০ মার্চ ২০২৪ সালে ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে পরিচালিত বিআরটিসি বাসে র‍্যাপিড পাসের মাধ্যমে ভাড়া আদায়ের সুবিধা চালু করা হয়।[৮] ২০২৪ সালে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ যেকোন রকম ক্ষেত্রে অর্থ পরিশোধের জন্য র‍্যাপিড পাসকে পেমেন্ট কার্ড হিসেবে গড়ে তুলতে "গণপরিবহনে সমন্বিত টিকেটিং ব্যবস্থা এবং ক্লিয়ারিং হাউজ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৪" নামক খসড়া প্রস্তুত করে।[৯]

কার্ড ব্যবহার[সম্পাদনা]

ঢাকা মেট্রোর টিকেট বিক্রয় মেশিনের বিকল্প হিসেবে র‍্যাপিড পাস ব্যবহারযোগ্য

এই কার্ডটি বিআরটিসির বাস সেবা, বিআইডব্লিউটিএর লঞ্চ সেবা, বাংলাদেশ রেলওয়ের রেলগাড়ি সেবা, এমআরটি ও বিআরটির টিকিট কেনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।[১০] ২০২৩ সালের জুলাই অনুযায়ী র‍্যাপিড পাস ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬৬,১৮০ জন ছিল।[১১]

ক্রয় ও রিচার্জ[সম্পাদনা]

কার্ডের জন্য ডাচ-বাংলা ব্যাংকের নির্দিষ্ট কিছু শাখার যেকোনো একটি থেকে কার্ডটি নিবন্ধন করে ক্রয় করতে হয়। এই শাখাগুলো রিচার্জ পয়েন্ট হিসাবেও কাজ করে।[১২] এছাড়া হাউস বিল্ডিং, উত্তরা, বনানী, শাহবাগ, মতিঝিল, রামপুরা, নোটুন বাজার, গুলশান-২, শুটিং ক্লাব, ঢাকা চাকা বনানী স্টপেজ ও পুলিশ প্লাজায় অবস্থিত ১০টি বাস কাউন্টার থেকে কার্ড ক্রয় ও রিচার্জ করা যায়।[১৩]

সমালোচনা[সম্পাদনা]

র‍্যাপিড পাস চালু হওয়ার পরও এটি সব বাস সেবার জন্য উপলভ্য করা যায়নি। অন্যদিকে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বেশি আদায় করতে না পারায় বাস কোম্পানিগুলো ভাড়া আদায়ে তা ব্যবহার করতে অনাগ্রহ বোধ করে।[১৪] ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বরে র‍্যাপিড পাস ছাড়া অন্য যেকোন কার্ড অবৈধ কারণ দেখিয়ে গুলশান চাকা নামক বাস পরিবহন সেবার জন্য ব্যবহৃত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক লাইসেন্সপ্রাপ্ত ডি-মানি নামক স্মার্ট কার্ডভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় ভাড়া সংগ্রহ ব্যবস্থার কার্যক্রম বন্ধ করতে র‍্যাপিড পাস কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছিল, যদিও এরকম কোন আইন নেই।[১৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. মানুন, সোহেল (১৪ অক্টোবর ২০১৭)। "Do you have your Rapid Pass?"ঢাকা ট্রিবিউন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ 
  2. আহমেদ, শামীম (২৪ জানুয়ারি ২০১৭)। "ঢাকার গণপরিবহনে আসছে 'র‍্যাপিড পাস'"বিডিনিউজ২৪.কম। ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ 
  3. "র‌্যাপিড পাসের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী"banglanews24.com। ৪ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০২৩ 
  4. মামুন, সোহেল (১৩ মে ২০২২)। "Lack of coordination delays Rapid Pass project"ঢাকা ট্রিবিউন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ 
  5. "PM launches Rapid Pass Card to ease bus fare payment"দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ 
  6. "গণপরিবহনের জন্য হচ্ছে র‍্যাপিড পাস : মেয়র আতিকুল"ঢাকা পোস্ট। ২১ জুন ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ 
  7. "বিআরটিসির বাসে আসছে র‌্যাপিড পাস"কালের কণ্ঠ। ৯ আগস্ট ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  8. "বিআরটিসি বাসে র‍্যাপিড পাস চালু"কালের কণ্ঠ। ২০ মার্চ ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০২৪ 
  9. "র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া"বণিক বার্তা। ৪ মে ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০২৪ 
  10. "র‌্যাপিড পাস দিয়ে মেট্রোরেলের ভাড়া দিতে পারবেন যাত্রীরা"দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। ২৮ ডিসেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ 
  11. আব্দুল্লাহ, শেখ (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩)। "র‍্যাপিড পাস – সব পরিবহনের জন্য একটি কার্ড – বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে"দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০২৪ 
  12. "'র‍্যাপিড পাস' পেতে যা করতে হবে"জাগো নিউজ। ১৪ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ 
  13. "উন্নয়ন মেলায় মিলছে র‌্যাপিড পাস কার্ড"বাংলানিউজ২৪.কম। ৬ অক্টোবর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ 
  14. শফিক, শাহেদ (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। "র‍্যাপিড পাস কার্ডে আগ্রহ নেই পরিবহন মালিকদের"বাংলা ট্রিবিউন। ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ 
  15. সোলায়মান, শাওন (২৪ জানুয়ারি ২০২৪)। "আইন ছাড়াই বাধ্যতামূলক 'র‌্যাপিড পাস'"দৈনিক কালবেলা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০২৪