বিষয়বস্তুতে চলুন

শাহেদ আলী পাটোয়ারী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডেপুটি স্পিকার
শাহেদ আলী পাটোয়ারী
পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ
কাজের মেয়াদ
১৯২৯ – ১৯৫৮
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৮৯৯
মতলব দক্ষিণ উপজেলা, চাঁদপুর, ব্রিটিশ রাজ, (বর্তমানঃ বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৯৫৮(1958-00-00) (বয়স ৫৮–৫৯)
ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান,(বর্তমানঃ বাংলাদেশ)
শিক্ষাস্নাতক

শাহেদ আলী পাটোয়ারী (১৮৯৯-১৯৫৮) একজন পূর্ব-পাকিস্তানি আইনজীবী, রাজনীতিবিদ। তিনি পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ও পরিষদের ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। স্পিকারের চেয়ারে থাকাবস্থায় তৎকালীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের হামলার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।[১][২]

জন্ম ও শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

শাহেদ আলী ১৮৯৯ সালে চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার আশ্বিনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯২১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে দর্শনশাস্ত্রে স্নাতক এবং ১৯২৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯২৫ সালে আইন পেশায় বিএল ডিগ্রি অর্জন করে ১৯২৬ সালে কুমিল্লা জেলা কোর্টে আইনজীবী হিসাবে যোগদান করেন।[১]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

তিনি ১৯২৯ সালে শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টিতে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয়। তিনি দীর্ঘদিন কৃষক প্রজা পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং কুমিল্লা জেলা শাখার সহসভাপতি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৩৭ সালে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক কর্তৃক কৃষক-শ্রমিক পার্টি গঠিত হলে (১৯৫৩) তিনি তাতে যোগ দেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। যুক্তফ্রণ্ট মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এবং ১৯৫৫ সালে পরিষদের ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন।

পাটোয়ারী তিনি কৃষক-শ্রমিক পার্টি ত্যাগ করে ১৯৫৮ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তখন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের সরকার গঠিত হয়, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন "হোসেন শহীদ সোহরওয়ার্দী" তিনি আওয়ামীলীগেরও নেতৃত্ব দিতেন, শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।[১]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

পূর্ব পাকিস্তান গণপরিষদে বিরোধী দলে ছিলো কৃষক প্রজা পাটি। ১৯৫৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) দলীয় সদস্য দেওয়ান মাহবুব আলী কর্তৃক স্পিকার আবদুল হাকিমের বিরুদ্ধে আনীত অপ্রকৃতস্থ (পাগল) বিষয়ক অনাস্থা প্রস্তাব পরিষদে গৃহীত হয়।[৩] ফলে ২৩ সেপ্টেম্বর ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলীর সভাপতিত্বে পরিষদের অধিবেশন পুনরায় শুরু হয়।[৪] অধিবেশনের শুরুতে সরকারি দলের সদস্য এবং বিরোধীদলীয় সদস্যদের মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা শুরু হয় এবং তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ঘটনাচক্রে শেখ মুজিবুর রহমানের ছোড়া কাগজ-চাপা-পাথর (পেপার ওয়েট)[৫] এবং ইউসুফ আলী চৌধুরীর (মোহন মিয়া)ও চেয়ারের হাতলের আঘাতে মাথায় গুরুতর আঘাত প্রাপ[৬] হয়ে শাহেদ আলী মারাত্মকভাবে আহত হন। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয় এবং ২৬ সেপ্টেম্বর (১৯৫৮) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।[৭][৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. আলী, শাহেদ আলী (২০১১)। বাংলা একাডেমী চরিতাভিধানবাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৫১৮–৫১৯। আইএসবিএন 984-07-5138-7 
  2. Shuvo, Subrata (২০২৩-০২-১৯)। "ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলী হত্যা ও শেখ মুজিব"সুব্রত শুভ এর ব্লগ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৮ 
  3. TIME (১৯৫৮-১০-০৬)। "PAKISTAN: Death in the Chair"TIME (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৫ 
  4. অধ্যাপক আসহাবউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক আসহাবউদ্দীন আহমদ রচনাবলী-১। সম্পাদনা: আনু মুহাম্মদ প্রকাশন-ফেব্রুয়ারী, ২০০৪। পৃ. ২৫৩-২৫৫
  5. ইব্রাহিম হোসেন (সেপ্টেম্বর,২০০৩), ফেলে আসা দিনগুলো, নতুন সফর প্রকাশনী, পৃ. ৭৫-৭৬
  6. ড. আবদুল মতিন (১৯৯৪),স্মৃতিচারণ পাঁচ অধ্যায়,র‍্যাডিক্যাল এশিয়া পাবলিশার, পৃ. ১৭-১৯
  7. ড. আবু সাইয়িদ (৩০ আগস্ট ২০১৪)। "শাহেদ আলী হত্যার সত্য মিথ্যা"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৯ 
  8. মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান (২০১২)। "আলী, শাহেদ১"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]