বিষয়বস্তুতে চলুন

হ্যারাসম্যাপ (মোবাইল অ্যাপ)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হ্যারাসম্যাপ
গঠিত২০০৫
প্রতিষ্ঠাতারেবেকা চিয়াও
প্রতিষ্ঠাস্থানমিশর
ধরনঅলাভজনক
উদ্দেশ্যসারা মিশর জুড়ে যৌন নিগ্রহের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা কমানোর চেষ্টা করা
ওয়েবসাইটharassmap.org

হ্যারাসম্যাপ একটি অলাভজনক মোবাইল এবং অনলাইন প্রযুক্তি যা মিশর জুড়ে যৌন হয়রানির সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা কমাতে দ্বিমুখে প্রবাহিত তথ্যের ম্যাপিং ব্যবহার করে।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

২০০৫ সাল পর্যন্ত, হ্যারাসম্যাপ- এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা রেবেকা চিয়াও মিশরীয় মহিলাদের দৈনন্দিন জীবনে যৌন হয়রানি বিস্তারের ঘটনার অন্বেষণ করা শুরু করেন এবং অবশেষে, বন্ধু এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্যে, একটি প্রচারাভিযান শুরু করেন। এটি মিশরীয় নারী অধিকার কেন্দ্র দ্বারা গৃহীত হয়।[২] যদিও এই প্রচেষ্টার লক্ষ্য ছিল মিশরের যৌন নির্যাতনের আইন পরিবর্তন করা যাতে অপরাধকে আরও ভালো ভাবে সনাক্ত করা যায়, কিন্তু আরও জরুরি কোনপদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ আসছিল। মিশরীয় নারী অধিকার কেন্দ্র কর্তৃক পরিচালিত ২০০৮ সালের একটি গবেষণায়, গবেষকরা জানতে পারেন, যে ১,০১০ জন মহিলার মধ্যে তারা জরিপ করেছেন, তাঁদের মধ্যে ৮৩% মিসরীয় নারী এবং ৯৮% বিদেশী নারী বলেছেন যে মিশরে তারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।[৩] বাস্তব ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে বিবেচনা করে, চিয়াও এবং হ্যারাসম্যাপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এঙ্গি গজলান একটি মোবাইল সহযোগী জনগোষ্ঠীর শক্তি কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং ফ্রন্টলাইনএসএমএসউশাহিদিকে সংযুক্ত করে হ্যারাসম্যাপ- এর প্রযুক্তিগত ভিত্তি তৈরি করেন। [৪][৫]

প্রতিষ্ঠাতাগণ[সম্পাদনা]

২০১০ সালে রেবেকা চিয়াও (প্রকল্পের নেতা), এঙ্গি গজলান, আমেল ফাহমি (গবেষণা বিভাগের প্রধান তদন্তকারী) এবং সাওসান গাদ হ্যারাসম্যাপ সহ-প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[৬]

লক্ষ্য[সম্পাদনা]

স্বেচ্ছাসেবী-ভিত্তিক উদ্যোগ হিসাবে, হ্যারাসম্যাপ- এর লক্ষ্য মিশরে যৌন নির্যাতন এবং লাঞ্ছনার সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা শেষ করা।[৭] এর দ্বিমুখী প্রবাহের ম্যাপিং পরিষেবা এবং সম্প্রদায় বিস্তার পরিষেবা ছাড়াও, হ্যারাসম্যাপ নারী এবং পুরুষ উভয়ের জন্য আত্মরক্ষার শিক্ষা এবং গোষ্ঠীগত শিক্ষা প্রদান করে।[৮]

এটি কীভাবে কাজ করে[সম্পাদনা]

যখন কেউ যৌন নির্যাতনের ঘটনার সম্মুখীন হন বা সাক্ষী হন, তারা একটি অনলাইন বিবৃতি পূরণ করতে পারেন অথবা এসএমএস, ই-মেইল, টুইটার বা ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিবেদন পাঠাতে পারেন[৯] ঘটনার বিবরণের পাশাপাশি ঠিকানা, রাস্তার নাম এবং জনসাধারণের প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু দিয়ে।[১০] হ্যারাসম্যাপ তারপর বিবৃতির সত্যতা যাচাই করে এবং সেই তথ্য মিশরের গুগল ম্যাপে রাখে, এরপর যৌন নির্যাতনের চিহ্নিত স্থানগুলিকে স্থানীয়করণ করে।[১১] মানচিত্রে লাল বিন্দু দেখা যাবে যেখানে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

হ্যারাসম্যাপ স্বেচ্ছাসেবীরা যেখানে ঘটনা ঘটেছেন সেসব এলাকা পরিদর্শন করেন এবং যৌন হয়রানি কাকে বলে ও এর অবসানের জন্য কি করা যায় সে সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করেন।[১২][১৩] স্থানীয় দোকান মালিক, পুলিশ কর্মকর্তা, দারোয়ান এবং অন্যান্য জন স্থানগুলির সাথে বৈঠক করে, হ্যারাসম্যাপ দল তাদের আশেপাশের এলাকাগুলিকে "হয়রানি মুক্ত অঞ্চল" করার জন্য তাদের একত্রিত করার কাজ করে।[১৪]

পুরস্কার এবং অনুদান[সম্পাদনা]

হ্যারাসম্যাপ ২০১১ সালের ওয়ার্ল্ড সামিট যুব পুরস্কার[১৫] এবং ২০১২ সালে ডয়েশ ভেলে সেরা ব্লগ পুরস্কার 'দ্য বেস্ট ইউজ অফ টেকনোলজি ফর সোশ্যাল গুড' জিতেছিল[১৬] এবং এটি এখন নাহদে এল মাহরুসাতে উন্নয়নে সহায়তা প্রাপ্ত একটি সামাজিক উদ্যোগ।[১৭] হ্যারাসম্যাপ- এর প্রতিষ্ঠার পর থেকে, অনুরূপ উদ্যোগ গ্রহণে সাহায্যের জন্য ২৫টি দেশের কর্মীরা তাঁদের কাছে এসেছেন। ২০১২ সালে, কানাডার ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (আইডিআরসি) মিসরে অংশগ্রহণকারীদের জমা দেওয়া প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে এবং জনসম্পৃক্ত তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহারে পদ্ধতিগত বিষয়গুলির উপর তথ্য সংগ্রহ করে যৌন নির্যাতনে অধ্যয়ন চালিয়ে যাওয়ার জন্য হ্যারাসম্যাপ- কে অনুদান প্রদান করে।[১৮]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Who we are"HARASSmap। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  2. "Who we are and why we began"HARASSmap। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  3. ""Clouds in Egypt's Sky" Sexual Harassment: from Verbal Harassment to Rape A Sociological Study"Egyptian Center for Women's Rights। United Nations Population Fund। ২ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  4. "How and why we began"HARASSmap। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  5. Ansari, Hina P. (ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৩)। "Could Mobile Technology Combat Sexual Harassment?"Huffington Post। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  6. "Our core team"HARASSmap। ৬ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  7. "Who we are"HARASSmap। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  8. Yuce, Serpil T.; Nitin Agarwal; Rolf T. Wigand; Rebecca Robinson (মে ৭, ২০১৩)। "Cooperative Networks in Interorganizational Settings: Analyzing Cyber-Collective Action" (পিডিএফ)Proceedings of the Workshop on Multiagent Interaction Networks: 4। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  9. "Report Harassment"HARASSmap। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  10. Ansari, Hina P. (ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৩)। "Could Mobile Technology Combat Sexual Harassment?"Huffington Post। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  11. Lee, Kermeliotis, Ian, Teo (ডিসেম্বর ২১, ২০১২)। "'Harassment map' helps Egyptian women stand up for their rights"CNN। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  12. Lee, Kermeliotis, Ian, Teo (ডিসেম্বর ২১, ২০১২)। "'Harassment map' helps Egyptian women stand up for their rights"CNN। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  13. Ansari, Hina P. (ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৩)। "Could Mobile Technology Combat Sexual Harassment?"Huffington Post। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  14. "Community action"HARASSmap। ২৭ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  15. "HARASSmap: Youth Award Winner"World Summit Youth Award। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  16. "Best Use of Technology for Social Good"Deutsche Welle। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  17. "Incubated social enterprises"Nahdet el Mahrousa। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  18. "HarassMap: Using Crowdsourced Data in the Social Sciences"IDRC। ১৭ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]