ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ

স্থানাঙ্ক: ২৩°২৮′৪৪″ উত্তর ৯১°০৪′২৪″ পূর্ব / ২৩.৪৭৯০° উত্তর ৯১.০৭৩৩° পূর্ব / 23.4790; 91.0733
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ, কুমিল্লা
ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ-এর লোগো এবং মনোগ্রাম
ধরনবেসরকারি মেডিকেল কলেজ
স্থাপিত২০০৫ (2005)
অধিভুক্তি
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
চেয়ারম্যানডা. কামরুন নাহার[১]
অধ্যক্ষঅধ্যাপক ডা. রুহিণী কুমার দাস[২]
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
১৫৭ (২০১৮)[৩]
শিক্ষার্থী৬০০+
ঠিকানা
কাবিলা, বুড়িচং
, ,
২৩°২৮′৪৪″ উত্তর ৯১°০৪′২৪″ পূর্ব / ২৩.৪৭৯০° উত্তর ৯১.০৭৩৩° পূর্ব / 23.4790; 91.0733
শিক্ষাঙ্গনগ্রামীণ (৭.৫ একর)
ভাষাইংরেজি
ওয়েবসাইটwww.emccomilla.com
মানচিত্র

ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, যেটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটির ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার কাবিলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি মেডিকেল কলেজ[৪]

ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজের প্রবেশদ্বার, পেছনে হাসপাতালের একাংশ দৃশ্যমান

এই প্রতিষ্ঠানটিতে পাঁচ বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) ডিগ্রির পাঠ প্রদান করা হয়। পাঁচ বছর মেয়াদী মূল শিক্ষাক্রমের পর শিক্ষার্থীদের ১ বছরের বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশীপ সম্পন্ন করতে হয়। এই কলেজ কর্তৃক প্রদত্ত এমবিবিএস ডিগ্রি বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কর্তৃক স্বীকৃত।[৪]

মেডিকেল কলেজটিতে ৬০০টি শয্যাসহ একটি আধুনিক ও উন্নতমানের হাসপাতাল রয়েছে ।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

চিকিৎসা সেবার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন সাধন, যোগ্য, দক্ষ এবং মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন চিকিৎসক তৈরী ও মানসম্মত, আধুনিক চিকিৎসা শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে কুমিল্লা জেলার কয়েকজন জনহিতৈষী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব যথাক্রমে জনাব শাহ মোঃ সেলিম পিএইচডি, জনাব ডাঃ মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ, জনাব ডাঃ কলিম উল্লাহ, জনাব ডাঃ আব্দুল কুদ্দুস আখন্দ এবং জনাব মোঃ আবদুর রউফ কুমিল্লা জেলায় একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।সেই উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৫ সালে এই কলেজটি কুমিল্লার প্রথম বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভ করে।[৫][৬] এই কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান জনাব ড. শাহ মোঃ সেলিম, যিনি বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বরত।[৫] বর্তমানে ডাঃ কামরুন নাহার প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ক্যাম্পাস[সম্পাদনা]

বালকদের ছাত্রাবাস
ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ
শান্তি সুনীতি হল, ছাত্রীদের আবাসিক হল

কলেজটির ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার কাবিলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ৭.৫০ একর জমির উপর মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত।[৫][৬] কলেজটিতে দুইটি বহুতল ভবন বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল, একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন, একটি বহুতল ছাত্রাবাস ও একটি বহুতল ছাত্রীনিবাস, একটি ইন্টার্ণ চিকিৎসক দের ডর্মেটরি ভবন ও ক্যান্টিন, মসজিদ, সুইমিংপুল, দুইটি খেলারমাঠ ও চিকিৎসক ও শিক্ষকদের কোয়ার্টার ইত্যাদি রয়েছে।[৭]কলেজের অবকাঠামো সমূহের স্থাপত্যশৈলী খুবই চমৎকার ও নান্দনিক।

কলেজ ক্যাম্পাস এর একাংশ, বালকদের ছাত্রাবাস মেজর গণি হল দৃশ্যমান

প্রতিষ্ঠান অধিভুক্তি ও প্রশাসন[সম্পাদনা]

২০১৮ সালের পূর্বে কলেজটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজ ছিলো। বর্তমানে এটি চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত একটি কলেজ।[৬][৮] কলেজ ও হাসপাতালের উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে।এছাড়াও কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি গভর্নিং বডি রয়েছে, যা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ অন্তর চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এবং উদ্যোক্তা ও অংশীদারদের পরিচালনা পর্ষদের যৌথ হস্তক্ষেপে পুনরায় নতুন করে গঠন করা হয়ে থাকে।কলেজটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরস্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমোদিত ও বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ এন্ড সার্জনস্ এর অধিভুক্ত ।এছাড়াও কলেজটি ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন এবং ফাউন্ডেশন ফর এডভান্সমেন্ট অফ ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল এডুকেশন ও রিসার্চ এ তালিকাভুক্ত মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ টি সাউথইস্ট এশিয়া রিজিওনাল এসোসিয়েশন ফর মেডিকেল এডুকেশন এর সদস্য ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি প্রাপ্ত।

একাডেমিক[সম্পাদনা]

কলেজ ক্যাম্পাসের একাংশ

কলেজটি বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) অনুমোদিত পাঁচ বছরের এমবিবিএস কোর্স পরিচালনা ও পাঠদান করে থাকে।কোর্সটি সম্পন্ন করতে পাঁচ বছরে একজন শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত মোট চারটি পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হতে হয়।এমবিবিএস কোর্সটি সফলভাবে ভাবে সম্পন্ন করবার পর একজন শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) ডিগ্রি অর্জন করে।তবে ২০১৬-২০১৭ বা তৎপূর্ববর্তী সেশনে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি ডিগ্রি লাভ করতো।এমবিবিএস চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের কলেজ হাসপাতালে ১ বছরের ইর্ন্টানশীপ বাধ্যতামূলক ভাবে সম্পন্ন করতে হয়। ইন্টার্নশীপটি বিএমডিসি থেকে চিকিৎসা সেবা অনুশীলন করার জন্য নিবন্ধীকরণের একটি পূর্বশর্ত।[৬][৯] এছাড়াও প্রতিষ্ঠান টি বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ এন্ড সার্জনস্ এর অধিভুক্ত। কলেজের হাসপাতাল অংশে ইন্টারনাল মেডিসিন,জেনারেল সার্জারি,গাইনোকোলজি, শিশুরোগ ও ডার্মাটোলজি বিষয়ে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ এন্ড সার্জনস্ এর এফসিপিএস কোর্সের পোস্টগ্র‍্যাজুয়েট প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা যায়। বর্তমানে কলেজটিতে এমবিবিএস কোর্সে প্রতি ব্যাচে ১১৫ টি আসন রয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রতিটি পেশাগত পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফল করে থাকে ও প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী অনার্স মার্ক সহকারে পেশাগত পরীক্ষাসমূহে উত্তীর্ণ হয়ে থাকে।এছাড়াও প্রতি বছরই এই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে পেশাগত পরীক্ষাসমূহে শীর্ষ দশের মধ্যে স্থান লাভ করে থাকে।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এই কলেজে ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান সহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা অধ্যয়ন করে থাকে, এসকল শিক্ষার্থীবৃন্দ এমবিবিএস ডিগ্রি লাভের পর স্ব স্ব দেশে ফিরে সুনাম ও দক্ষতার সাথে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে। কলেজের মোট আসন সংখ্যার ৪৫% বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ।

প্রতি বছর এই কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্নকৃত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী দেশের এফসিপিএস, এমএস, এমডি, এমফিল, এমসিপিএস সহ অন্যান্য স্নাতকোত্তর কোর্সগুলো তে সুযোগ পেয়ে থাকে ও সফলতার সাথে কৃতকার্য হয়ে থাকে। এছাড়াও অনেক শিক্ষার্থী এমবিবিএস সম্পন্ন হবার পর যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ভারত, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া সহ বিভিন্ন দেশে এমবিবিএস পরবর্তী স্নাতকোত্তর কোর্স সম্পন্ন করতে সুযোগ পেয়ে থাকে।পাশাপাশি এ কলেজের অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের স্বাস্থ্য ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে দেশের জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করছেন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনায় নিয়োজিত আছেন অনেকে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালসমূহে চিকিৎসক ও কনসালট্যান্ট হিসেবে কর্মরত আছেন অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Teachers' List"Eastern Medical College। ১৪ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৮ 
  2. "Teachers' List"Eastern Medical College। ১৪ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৮ 
  3. "Teachers' List"Eastern Medical College। ১৪ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৮ 
  4. "Eastern Medical College"www.emccomilla.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-০৪ 
  5. "EMC Comilla Founder Directors"Eastern Medical College। ১২ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  6. "Eastern Medical College"World Directory of Medical Schools 
  7. "Eastern Medical College"www.emccomilla.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-০৪ 
  8. "Affiliated Colleges"University of Chittagong। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  9. "List of Recognized medical and dental colleges"বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]